লিবারেল সহনশীলতার ভন্ডামি

লিবারেল বুলি: “তোমাদের মাঝে সহনশীলতা নেই।”

তরজমা: “সহনশীলতার যতটুকু নির্দিষ্ট রূপ আমি সংজ্ঞায়িত করছি তা তুমি মেনে নিচ্ছো না।”

“টলারেন্স” বা সহনশীলতার ইংরেজিতে বেশ কিছু সংজ্ঞার একটি হলো: পরিমাপযোগ্য নির্দিষ্ট বস্তু—বিশেষত যন্ত্র কিংবা যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অনুমোদিত বিকৃতি।

ফ্যাক্টরিজাত পণ্য কখনো হুবহু একই হয় না। ধরা যাক, কোনো ফ্যাক্টরিতে এক লক্ষ পিস্টন তৈরি করা হলো, তাহলে এমন দুটো পিস্টনও পাওয়া সম্ভব হবে না যারা অবিকল একই। পার্থক্য থাকবেই; তবে সেই পার্থক্য একটি নির্ধারিত সীমার মধ্যে হতে হবে। আর এটিই হলো বিকৃতির গ্রাহ্য বা অনুমোদিত সীমা। কোনো পিস্টন যদি এই গ্রহণযোগ্য সীমাও ছাড়িয়ে যায় তবে সেটিকে কাজের অনুপযোগী গণ্য করা হবে এবং ভাগাড়ে ছুঁড়ে ফেলা হবে।

লিবারেলরা নিজেদের অন্তহীন সহনশীল হিসেবে জাহির করে, আর নিজেদের ছাড়া বাকীদের ব্যাপারে তাদের ধারণা হলো সহনশীলতার ছিটেফোঁটাও যেন অন্যদের মধ্যে নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের সহিষ্ণুতাও সংকীর্ণ এক গণ্ডির অন্তর্ভুক্ত। প্রকৃতপক্ষে ‘অসীম সহিষ্ণুতা’-র বাস্তবিক কোনো রূপ নেই, এটি কেবলই একটি অক্সিমোরন— স্ববিরোধী ধারণা। আর নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে সহিষ্ণুতা-অসহিষ্ণুতা প্রত্যেকটি দর্শন এবং বিশ্বাসেই আছে। ইসলামেরও আছে। মূলত ভিন্নতার জায়গাটি হলো— লিবারেল সহিষ্ণুতার শেকড় মূলনীতিহীন ও খেয়ালখুশিমনা রীতি-প্রথার অনুশীলনের মধ্যেই প্রোথিত। আর ইসলাম অনুমোদিত সহনশীলতার ভিত্তি হলো হিকমাহ-প্রজ্ঞা ও হিদায়াত।

ফ্যাক্টরির উদাহরনে ফিরে যাই। মেশিন বা পার্টসগুলোর বিকৃতির পরিমাণ যদি সঠিক মাত্রায় ঠিক করে দেওয়া না হতো তাহলে উৎপাদন ত্রুটিপূর্ণ হতো। মানুষের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার প্রযোজ্য। যদি সকল বৈচিত্র্য একত্রে চলতে দেওয়া হলে সেটা রাষ্ট্র , সমাজের জন্য ক্ষতিকর।যথাযথ মাত্রার বৈচিত্র্য অবশ্যই স্বীকৃতিযোগ্য; কিন্তু সীমারেখা বিবর্জিত ঢালাও বৈচিত্র্য কিছুতেই মানবসত্তার কার্যকরী নিপুণতা নিশ্চিত করবে না। নিপুনতা-কার্যকারিতা-সমৃদ্ধি এই শব্দগুলোর প্রকৃত উপলব্ধির নিরিখে মানবসত্তার জন্য সর্বাধিক উপযোগী নীতির ব্যাপারে কে অধিক অবগত তাঁর চেয়ে— যিনি এই মানবসত্তার সৃজনকর্তা ও প্রতিপালক?

 

https://www.facebook.com/haqiqatjou/posts/1671061386445910

MuslimSkeptic Needs Your Support!
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments