
উসামা হাজারী থেকে আমন্ত্রিত পোস্ট
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন:
আঘাতে জর্জরিত হওয়ার পরেও যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে[to press on in pursuit of the aggressors—even] সাড়া দিয়েছে[the summons of]। তাদের মধ্যে যারা নেক কাজ করেছে[doing] এবং আল্লাহকে ভয় করে চলেছে, এদের সবার জন্যে রয়েছে মহাপুরস্কার[awaiting]
যাদেরকে [faithless]মানুষ যখন বলেছে: ” তোমাদের বিরুদ্ধে এক বিশাল বাহিনী জমায়েত হয়েছে, অতএব তোমরা তাদের ভয় কর।” এটি, অতঃপর,[only] তাদের ঈমান আরো বাড়িয়ে দিল। তারা বলল[said], “আল্লাহ তায়ালাই আমাদের জন্যে যথেষ্ট এবং তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক।”
(কুরআন, ৩:১৭২-৩)
আব্দুল হাকিম মুরাদ তার বই, ট্রাভেলিং হোম এ বলেন:
প্রাচীন সময়ের মত আধুনিক সময়েও ইসলামবিদ্বেষীদের ধমকে নাকিকান্না কাঁদতে থাকা মুনাফিকদের দুর্বল কিংবা বিলীন বিশ্বাস তাদের ভয় আর নিষ্পেষণ থেকে বাঁচাতে পারে না, অন্যদিকে আপাতদৃষ্টিতে বিপরীত মনে হলেও বিশ্বাসীদের বিশ্বাস (ঈমান) এই পীড়নের মধ্যেও ঠিকই বাড়তে থাকেকারণ, এই দুর্ভাগ্যের মধ্যেও তারা পরিষ্কার বুঝতে পারে যে এই দুনিয়া সুখকর নয়; বরং এখনো সবকিছু সৃষ্টিকর্তার হাতেই রয়েছে।
মুরাদের বইটি ভারতের মুসলিমদের বর্তমান পরিস্থিতির একটা নিখুঁত বর্ণনা দেয়।
যখনি আমরা ভারতের প্রতিটা জায়গায় হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণে নাকিকান্না কাঁদা ভন্ডদের উদয় হতে দেখি, তখনি আমরা এই অত্যাচারের মধ্যেও বিশ্বাসীদের বিশ্বাসকে আরো বৃদ্ধি পেতে, আরো শক্তিশালী হতেও দেখি। ধর্মনিরপেক্ষতার সকল পথে চূড়ান্তভাবে হতাশ হওয়ার পর, অবশেষে বাঁচার জন্য তারা আল্লাহর দিকে ফিরছে, যা একটা ইসলামী জাগরণের পথ তৈরি করছে।
মাওলানা খলিল-উর-রহমান সাজ্জাদ নুমানি (হাফিজাহুল্লাহ)-ও তার একটি লেকচারের মধ্যে এই ব্যাপারটির দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বর্তমানে ঘটতে থাকা একটা বাছাইকরন প্রক্রিয়ার কথা বলেন তিনি।
” মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের মধ্যে থেকে, মাত্র অল্প কয়েকজনই থাকবে যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বাসী; তথা মু’মিন হিসেবে গ্রহণ করবেন। বাকি মানুষগুলো ইসলামী সম্প্রদায় থেকে বেরিয়ে যাবে, তারা মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে যাবে, তারা মুনাফিক (ভন্ড)-দের সমর্থন জানাবে, এবং তারা দাজ্জালের বাহিনীতে যোগ দিয়ে তার অংশ হয়ে যাবে। আমি ঠিক এই বর্তমান মুহুর্তের কথাই বলছি। আমি শত শত হাদীসের আলোকেই এই কথা বলছি। এটা কোন স্বাভাবিক সময় বা যুগ নয়। “এটা কোন স্বাভাবিক সময় বা যুগ নয়”- ঠিক এই কথাটা আমি গত বিশ-পঁচিশ বছর ধরেই বলে আসছি। এটা একটা পরিবর্তনের যুগ; আর যখনই কোন পরিবর্তনের যুগ আসে, সর্বপ্রথম একটা বাছাইকরন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তা শুরু হয়।”
وَلِيُمَحِّصَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَيَمْحَقَ الْكَافِرِينَ
যাতে আল্লাহ বিশ্বাসীদের পবিত্র করতে[through trials] আর অবিশ্বাসীদের ধ্বংস করতে পারেন। (সূরা আল ইমরান: ১৪১)
لِيَمِيزَ اللَّهُ الْخَبِيثَ مِنَ الطَّيِّبِ وَيَجْعَلَ الْخَبِيثَ بَعْضَهُ عَلَى بَعْضٍ فَيَرْكُمَهُ جَمِيعًا فَيَجْعَلَهُ فِي جَهَنَّمَ أُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
«[This is] আল্লাহ মন্দকে উত্তম থেকে পৃথক করবেন এবং মন্দদের একে উপরের উপর রেখে স্তূপীকৃত করবেন এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এরা তারাই যারা ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা আল আনফাল: ৩৭)
এটাই সেই সময় এবং যুগ যার কথা এই আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে যেখানে আল্লাহ তায়ালা বিশুদ্ধ এবং আসল বিশ্বাসীদের আলাদা করবেন – তারা সংখ্যায় খুবই অল্প হবে শোনো এবং খুব ভালোভাবে মাথায় রাখো। তাদের অর্থাৎ বিশ্বাসীদের সংখ্যা খুবই অল্প হবে। আর বাকিরা আবর্জনা ছাড়া কিছুই না। আমরা সবাই একসাথেই বাস করছি, একপক্ষ অপরপক্ষকে চেনে না, এবং কেউই অপরপক্ষকে আলাদা করে খুঁজে বের করতেও পারবেনা। কিন্তু, প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজেকে ঠিকই চেনে। আমরা অন্যদের দিকে নজর রাখি ঠিকই কিন্তু নিজেদের দিকে তাকাই না।
বড় হতে হতে দেখেছি; যে কয়েকজন বিখ্যাত ভারতীয় মুসলিমকে এই বিশ্ব চিনতো, তারা ছিল তিন বলিউড অভিনেতা: শাহরুখ খান, সালমান খান আর আমির খান সত্যিকার অর্থেই একসময় আমরা এটা জেনে গর্ব করতাম; যে ভারতের টপ তিনজন তারকা হলো মুসলিম। এমনকি যখন সংবাদপত্রে সালমান খানের টুপি পরে মসজিদ থেকে বেরোনোর ছবি ছাপা হয়; যখন শাহরুখ খান “মাই নেম ইজ খান” মুভি বানিয়ে সেখানে নিজের মুসলিম পরিচয় কে স্বীকৃতি দেয় এবং যখন আমির খান নিজের মাকে নিয়ে হজে যায়; তখনও আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম।
কিন্তু, ২০১৪ সালের মধ্যে, এসব কিছুই বদলে গেলো সবাই জানতো, যে ২০০২ সালের গুজরাটের গনহত্যার জন্যে কে দায়ী ছিল, কিন্তু তারপরও আমরা দেখলাম যে সালমান খান গিয়ে নিজের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন প্রমোট করছে, এমনকি সাথে একটা ঘুড়িও উড়াচ্ছে। আমরা শাহরুখ খান আর আমির খানকে এই স্বৈরাচারীদের সমর্থন করতে দেখলাম; এবং যখন ফকফকা দিনের আলোতে মুসলিমদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছিল, যখন মুসলিমদের অত্যাচার করা একটা নিয়মে পরিণত হলো, তখনও আমরা তাদের নিশ্চুপ হয়ে তাকিয়ে থাকতেই দেখলাম
RELATED: Bollywood’s Persistent Islamophobia Problem
শেষমেশ আমরা জেগে উঠলাম; আর বুঝতে পারলাম যে এইসব অভিনেতারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করে না।
তখন আমাদেরকে বাঁচানোর জন্য – রাহুল গান্ধী আর অরবিন্দ কেজিওয়ালের মত যেসব সেকুলার নেতারা ছিল, আমরা তাদের দিকে তাকালাম। অবশ্যই, তারাও অকার্যকর প্রমাণিত হলো। আমাদের আসাদুদ্দিন ওয়াইসি আর মাহমুদ মাদানীর মত অনেক বড় কিছু মুসলিম নেতা ছিল যাদের ব্যক্তিত্ব লাখ লাখ মানুষকে আকর্ষণ করেছিল। কিন্তু, তারাও আমাদের হতাশ করলো। তারা বরং ভারতের বুক থেকে মুসলিমদের অস্তিত্ব মুছে ফেলতে ব্যাকুল উন্মত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতাকেই খুশি করার সিদ্ধান্ত নিলো। এমনকি গণহত্যা বিশেষজ্ঞ ড. গ্রেগরি স্টান্টনও এই বাস্তবতার দিকে আঙুল তুলে দেখিয়েছেন।
আল জাজিরার রিপোর্ট :
গণহত্যার পূর্বাভাস, প্রতিরোধ, বন্ধ এবং গনহত্যা অপরাধের বিচার দাবি করার জন্য ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত তার বেসরকারি সংস্থাটির পক্ষে স্টান্টন বলেন, “আমরা সতর্ক করছি যে ভারতে কিন্তু সত্যি সত্যিই গণহত্যা হতে পারে।”
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের বৈষম্যমূলক পলিসি এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পলিসির মধ্যে সাদৃশ্য টেনে স্টান্টন বলেন যে গণহত্যা শুধু একটা ঘটনা নয়, বরং তা একটা প্রক্রিয়া।
তার উল্লেখ করা পলিসিগুলোর মধ্যে ছিল ২০১৯ সালে সাত দশক ধরে বহাল থাকা ভারত প্রশাসিত কাশ্মীরিদের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের স্তগিতকরণ – আর একই বছরের মুসলিম বাদে বাকি সকল সংখ্যালঘুদের স্বীকৃতি দেওয়া নাগরিকত্ব আইন।
ভার্জিনিয়ার জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা বিষয়ক প্রাক্তন লেকচারার স্টান্টন বলেন যে তিনি ভারতেও মিয়ানমারের মত একই ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন; কারণ মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদেরকেও প্রথমে আইনত অ-নাগরিক ঘোষণা করা হয়েছিল – আর তারপর সহিংসতা আর নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, ” আমরা এখন ঠিক একইরকম ঘটনা-প্রবাহ দেখছি।”
ভারতের বিচারব্যবস্থা আমাদের শেষ ভরসা ছিল। তারাও অবশ্য ঠিকই আমাদের মুখের উপর “বিচার”- এর দরজা ঠাস করে বন্ধ করে দিল। বিশেষ করে ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গার পরে, তারা আমাদের পুরোপুরি হতাশ করলো। ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বাস্তবতা সম্পর্কে বিভ্রান্ত হওয়ার পর- অন্য কোথাও আশ্রয় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ভারতের মুসলমানরা সাহায্যের জন্য আল্লাহর দিকে ঋজু হচ্ছে।
ভারতের এই ইসলামী জাগরণের প্রথম প্রকাশ্য নিদর্শন ছিল ২০১৯ সালে জাইরা ওয়াসিমের বলিউড ত্যাগ। সে আমির খানের সাথে অনেক বড় বড় মুভিতে অভিনয় করা একজন বলিউড অভিনেত্রী ছিল। এমনকি একসময় ‘সিক্রেট সুপারস্টার‘ মুভিতে সে চরম ধর্মবিরোধী একটা চরিত্রে অভিনয় করে, যেখানে শেষ দৃশ্যটি ছিল তার পরনের বোরকা খুলে ফেলে নিজের গায়িকা হওয়ার স্বপ্নের পিছু নেওয়ার। সে পরবর্তীতে বলেছে যে তার কাজ তার ধর্মবিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল।
” বলিউড আমাকে আসলেই অনেক ভালোবাসা, সমর্থন আর বাহবা এনে দিয়েছে, কিন্তু যখন আমি নিঃশব্দে-অচেতন ভাবে আমার বিশ্বাস- ঈমান [faith]থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলাম, তখন এটা আমাকে একটা মূর্খতার রাস্তায়ও ঠেলে দিয়েছে।” আমার ঈমানের[faith] সাথে সাংঘর্ষিক একটা পরিবেশে কাজ করতে করতে, আমার ধর্মের সাথে আমার সম্পর্কটাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল।”
…
” আমার শান্তি, ঈমান [faith] আর আল্লাহ তায়ালার সাথে আমার সম্পর্ক ধ্বংসকারী ওই পরিবেশের দিকে ঝুঁকে পড়াটা অনেক সহজ ছিল।”
এখন সে নিয়মিত টুইটারে ইসলামী কন্টেন্ট পোস্ট করে।
তার ধারা অনুসরণ করে আরেকজন বলিউড অভিনেত্রী, সানা খান ২০২০ সালে শোবিজ ত্যাগ করেন।
” অবশ্যই, অতীত জীবনে আমার নাম-যশ, খ্যাতি, অর্থ সবই ছিল। আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করতে পারতাম। কিন্তু কিছু একটা সেখানে ছিল না। আমার হৃদয়ের শান্তি সেখানে ছিল না। আমার সবকিছুই ছিল, কিন্তু আমি সুখী ছিলাম না। খুবই কঠিন ছিল সময়টা। অনেক সময়ই আমি ডিপ্রেশনে পড়ে যেতাম।অনেক দিন এমন হতো যে, কোন নিদর্শনের মধ্যে যেনো আমি আল্লাহর বার্তা দেখতে পেতাম।”
…
“, ২০১৯ সালের রমজান মাসের কথা মার এখন মনে আছে। আমি নিজেকে একটা জ্বলন্ত কবরের মধ্যে দেখতে পেতাম। শুন্য কবরটার মধ্যে আমি যখন নিজেকে দেখলাম, আমার দৃঢ় বিশ্বাস হল যে, আল্লাহ আমাকে বলছেন যে, যদি আমি না বদলাই, তাহলে এই হবে আমার পরিণতি। ওটা আমাকে খুবই শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিল।”
পরবর্তীতে তিনি মুফতি আনাস সাইদ নামের একজন ইসলামী স্কলারকে বিয়ে করেন। তিনিও এখন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে নিয়মিত ইসলামী কন্টেন্ট শেয়ার করেন। তিনি প্রায়ই হিজাবের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন।
RELATED: Yes, Islam Forces Muslim Women to Wear Hijab
বিস্ময়করভাবে, এই ঘটনাগুলো শুধুমাত্র মুসলিমদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
সবরীমালা জয়কান্তন নামের একজন বিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার ইসলাম গ্রহণ করেন । তিনি বলেন:
“আমি নিজেকে প্রশ্ন করলাম, যে বিশ্বে মুসলিমদের বিরুদ্ধে এত ঘৃণা কেন? আমি একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবেই কুরআন পড়া শুরু করি। তারপর সত্যটা জানতে পারলাম। এখন আমি ইসলামকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।”
যদিও ইসলামী আন্দোলন এবং সুফিদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে ভারতীয় মুসলমানরা শুরু থেকেই ধর্মীয়ভাবে প্র্যাক্টিসিং ছিল; সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুমোদন লাভের চেষ্টায় থাকা কিছু ইসলামী “স্কলার” এবং “নেতা”-ই ভারতে ইসলামকে আদর্শগতভাবে বিপর্যস্ত করছিল। তাই, আমাদের ইসলামের সামগ্রিক ধারণার অভাব ছিল আর এভাবেই আমরা ভারতের বহু-ঈশ্বরবাদী পৌত্তলিক সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।
ভারতীয় মুসলমানদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম “ওয়াহদাত ই আদিয়ান” বা “ধর্মের ঐক্য” নামের সেকুলারিজম, জাতীয়তাবাদ এবং বহুবর্ষজীবীতার কুফরি মতাদর্শে আক্রান্ত ছিল (এটি সেকুলার কংগ্রেস দ্বারা প্রচারিত একটি আদর্শ যা দাবি করেছিল যে সমস্ত ধর্মের মধ্যেই কিছু না কিছু সত্য-সেইসাথে পরিত্রাণের পথ পাওয়ার কিছু উপায় রয়েছে। ) যাইহোক, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাবের সাথে সাথে, ভারতীয় মুসলমানরা বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহ এবং এর স্কলারদের সাথে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল। আমাদের চোখ খুলে গেল, এবং আমরা অবশেষে সমস্যাগুলি চিনতে শুরু করলাম।
ডাঃ জাকির নায়েকও তার একবিন্দু ছাড় না দেওয়া প্রকাশ্য ডিবেট এবং অমুসলিমদের সাথে তার আলোচনার মাধ্যমে এর বীজ রোপণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যাইহোক, সবগুলো ইসলামী আন্দোলন এবং সুফীদের সকল পরিশ্রমের প্রকৃত ফলাফল তখন দেখা গেলো, যখন ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার ২০১৪-র পরে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মুসলমানদের উপর অত্যাচার শুরু করলো। আমরা চেয়ে চেয়ে দেখলাম,যে মুনাফিকরা সব একে একে আমাদের পরিত্যাগ করছে। এবং তখন আমরা বুঝলাম, যে এই সময়ে আমাদের সত্যিকারের আশা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউই নয়।
বিশেষ করে দিল্লির কর্মসূচির পরে, আমি এবং আমার আশেপাশের অনেকেই- যারা আগে লিবারেলিসম; সেকুলারিজম; ফেমিনিসম, প্রগতিবাদ; সমাজতন্ত্র; এবং মার্কসবাদের মতো মতাদর্শ অনুসরণ করতো, তারা সবাই-ই ইসলামের বিরুদ্ধ সমস্ত মতবাদ পরিত্যাগ করল। এটি শুনতে আশ্চর্যজনক লাগতে পারে, তবে আমি আগে ব্যক্তিগতভাবে একজন কট্টর সমাজতান্ত্রিক আর লিবারেল ছিলাম। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন ২০২০ সালের রমজানে যখন আমি কোরআনের একটি অনুবাদ পড়লাম, তখনি আমি আমার ডেলিউশান থেকে বের হয়ে এলাম। আমি “আম আদমি পার্টি” নামের একটি সোশ্যাল-ডেমোক্রেটিক পার্টিতে দুই বছর কাটিয়েছি; এমনকি ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পক্ষে প্রচার ক্যাম্পেইন চালানোর জন্য আমি দিল্লিতেও গিয়েছি। লকডাউনে গিয়ে আমি মার্কসবাদ পড়া শুরু করেছিলাম। আমি এমনকি ” রেভোলুশন ইন টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি” নামে একটি বইও লিখতে শুরু করেছিলাম; এবং সুযোগ পেলেই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেওয়ার প্ল্যানও শুরু করেছিলাম। কিন্তু:
“তারা পরিকল্পনা করে, এবং আল্লাহ তায়ালাও পরিকল্পনা করেন; আর আল্লাহই সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী।” (কুরআন, ৮:৩০)
ভগৎ সিং (একজন মার্কসবাদী বিপ্লবী) এর লেখা “ আমি কেন নাস্তিক ,” নামের একটি প্রবন্ধ সত্যিই আমার বিশ্বাসকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছিল, এবং ইসলাম সম্পর্কে আমার মধ্যে উদ্ভূত এই নতুন সন্দেহগুলি দূর করার জন্য আমি ডাঃ জাকির নায়েকের বিতর্কগুলো দেখার পরিকল্পনাও করেছিলাম। যাইহোক, যে সমস্ত নেটফ্লিক্স শোর মধ্যে আমি ডুবে ছিলাম-তার কারণে আমি ঠিক সময় করে উঠতে পারিনি।
RELATED: Netflix Pushes Sexual Liberation on the Muslim World The Surprising History of Its Founder
ভারতে CAA NRC বিরোধী আন্দোলনের সময়, আমি বামপন্থী বন্ধুদের একটি ভাল সার্কেল তৈরি করেছিলাম, যাদের মধ্যে একজন ছিল… তাকে নাহয় আমরা ‘অতীশ’ বলেই ডাকি। ও একজন কট্টর বামপন্থী, LGBTQ সমর্থক ছিল, এবং এখন সে নিজেই “তাদের” একজন হিসেবে চিহ্নিত৷ (আমরা আর কথা বলি না)। CAA-NRC চলাকালীন আমাদের এক বিপ্লবী হালাকায়, তার বোন জিজ্ঞেস করেছিল:
“কুরআনের বিষয়ে এই ইউনিক জিনিসটা ঠিক কি আসলে?”
আমি- বুঝতেই পারছেন-সেই সময়ে যেরকম টেক্সটবুক লিবারেল ছিলাম-স্বভাবতই প্রশ্নটা উদাসিনভাবে নিলাম আর সরলভাবে উত্তর দিলাম:
“আমি জানি না।”
ওদিকে, গাঁজার প্রভাবে- অতীশ দার্শনিকভাবে উত্তর দিলো:
“কুরআন একটি যাদুর বই। তুমি যা চাইবে, এটা তাই তোমাকে দেবে।”
তখন একথার মাধ্যমে সে ঠিক কি ইঙ্গিত করেছিল জানি না, কিন্তু যে বিপ্লব আমি খুঁজছিলাম তার জন্য আমি কুরআনেই খোঁজ করার মনস্থির করলাম। অবশেষে সেই লকডাউনের সময়ই আমি বসলাম এবং নিজেকে বললাম:
“এই সেই কুরআন- বহু মানুষের দাবিমতে স্বয়ং আল্লাহর বাণী। আমি নিজেই দেখব এটা সত্যি কি না, এবংআমি এর মধ্যেই আমার বিপ্লব খুঁজব।”
প্রথম প্রথম কুরআন পড়ার সময়, আমি এর “মিসোজিনি”, এর “আমরা বনাম তারা” আখ্যান এবং “হোমোফোবিয়া” নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলাম, কিন্তু তারপরেও আমি পড়তে থাকলাম। মনে হচ্ছিল যেন আল্লাহ স্বয়ং আমার হৃদয়ের সাথে কথা বলছেন এবং আমার আত্মা উত্তর দিচ্ছে:
“এটাই সত্য, আর বাকি সব মিথ্যা।”
মনে হচ্ছিলো আল্লাহই আমাকে কুরআনের সাথে একমত হওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন, আর আত্মসমর্পণ না করে আমার কোন উপায় নেই।
ধীরে ধীরে, আমি যেন এর সহজ-সরল কিন্তু একবিন্দু ছাড় না দেওয়া কথাগুলোর মধ্যে একদম ডুবেই গেলাম। আমি তখনও কুরআনের অর্ধেকও শেষ করিনি, তবুও আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এটাই পরম সত্য।, এটি যা কিছুর পক্ষে দাঁড়িয়েছিল এবং যেসকল বার্তা দিয়েছিল- তা সবই আমি নির্দ্বিধায় মেনে নিয়েছিলাম। কুরআন শেষ করার পর, আমি নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সিরাহ (জীবনী) পড়ি। ততক্ষণে, আমি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম যে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চেয়ে বড় বিপ্লবী- এবং ইসলামের চেয়ে বড় বিপ্লব আর কিছু নেই।
কুরআনে আমার “মার্কসবাদী বিপ্লব” খুঁজতে গিয়ে বরং আল্লাহর বাণীই আমার মধ্যে বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়।
আমার নতুন-পুনরুজ্জীবিত বিশ্বাসের সাথে সম্পূর্ণরূপে ইসলামে আত্মসমর্পণ করার পর, আমি আম আদমি পার্টি ছেড়ে একটি ইসলামী দলের ছাত্র শাখায় যোগদান করি। ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসার স্নাতকদের কাছ থেকেও আমি ইসলাম সম্পর্কে আরও শিখতে শুরু করি।
আমার আশেপাশের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যরা লিবারেলিসমকে সমর্থন করত; তারা এমনকি LGBTQ+ সমাবেশে মিছিলও করেছিল। অবশ্য এখন তারা শুধু একটি জিনিসই দেখতে চায়: ইসলামের পুনরুজ্জীবন।
RELATED: Latest Arab Youth Survey: Less Democracy and More Shariah Please!
শৈশবকাল থেকে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল এমন একজন; যে সাধারণ আধুনিক-ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার মধ্যে বেড়ে উঠেছে। এর সাথে এটাও যোগ করতে হবে; তার বাবা একজন মুভি প্রোডিউসার। আমরা দুজনেই হায়দ্রাবাদের সবচেয়ে অভিজাত পশ্চিমা স্কুল, মেরিডিয়ান স্কুলে গিয়েছিলাম। মুম্বাইয়ের আমিটি ইউনিভার্সিটিতে, সে LGBTQ+ কে সমর্থন করে নীল কেশি লেসবিয়ানদের সাথে পাশাপাশি মিছিলও করেছে।
হাই স্কুলের জন্য, তাকে উত্তর ভারতের একটি বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হয়েছিল যেখানে কেবল নামাজ পড়ার জন্যই স্কুলের হিন্দু সহপাঠীরা তাকে উত্যক্ত আর মারধর করত। তাকে “কাটুয়ে” এবং “কাঠমোল্লা” (ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত অবমাননাকর শব্দ)-র মতো অপমানজনক নামে ডাকা হত, যা তাকে দ্বীন থেকে আরও দূরে সরিয়ে নিয়েছিল।
যদিও সে তখন খুব একটা প্রাকটিসিং ছিল না, তারপরেও নিজের মুসলিম পরিচয়ের কারণে বুলিং-এর মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর কলেজের বছরগুলিতে সে লিবারেলিসম আর যুক্তিবাদের পক্ষে ওকালতি শুরু করে এবং ইসলামের বিরোধিতা শুরু করে। কোভিড-১৯ লকডাউনের সময়, যখন সে অবশেষে নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার মত কিছু সময় পেল, তখন সে বুঝতে পারলো যে সে কত বড় বোকামো করছিল। সুতরাং সে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করল। একসময় জাতিসংঘের কূটনীতিক হওয়ার স্বপ্ন দেখা আমার এই বন্ধু এখন দাঈ (ইসলামের আহ্বানকারী) হতে চায় এবং ইসলামকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কাজ করতে চায়। সে মন্তব্য করেছে:
“ইসলাম আমাকে মডার্নিসম নামক টারটারাস (গ্রীক পুরাণে পাপী আত্মাদের শাস্তির স্থান) থেকে বাঁচিয়েছে এবং তার সমস্ত গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যকে সাদরে আলিঙ্গন করতে আমাকে সাহায্য করেছে।”
এই লেখার অংশ হিসাবে, আমরা দিল্লি থেকে একজন বোনের সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলাম। তিনি উল্লেখ করেছেন:
“আমি এমন এক সমাজে বড় হয়েছি যেখানে ধর্ম ছিল নিতান্তই গৌণ বিষয়। আমার বাবা-মা আমাকে মানুষের সাথে মানুষের মত আচরণ করতে শিখিয়েছিলেন; এবং এমনকি আমার আত্মাও এই নীতিই অনুসরণ করতো।”
যখন তিনি যখন চতুর্থ শ্রেণীতে ছিলেন তখনই প্রথমবারের মত ইসলামোফোবিয়ার সম্মুখীন হয়েছিলেন- এক লোক অন্যদের বলে বেড়াতো যে তিনি (ওই বোন) মুসলমান; সুতরাং সবাই যেন তাকে এড়িয়ে চলে। অন্যান্য বাচ্চারা তার পাশে দাঁড়ানো সত্ত্বেও, তিনি পরিস্থিতি বুঝে উঠতে পারেননি- কারণ এই “হিন্দু” বনাম “মুসলিম”- এর ধারণায় তিনি পুরোপুরি নতুন ছিলেন।
তিনি বলেছেন যে বড় হওয়ার সময়, নিজের আত্মপরিচয় লুকানোর জন্য তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন; এমনকি তিনি কিছু পৌত্তলিক মূল্যবোধও শিখেছিলেন যাতে তিনি অন্যদের কাছে অনাহুত না হন।
” ছোট থেকে অন্যদের কাছে পপুলার হওয়ার কারণে, আমি কখনই মানুষকে হতাশ করতে চাইনি।”
তিনি তার পরিবারের সম্পর্কে বলেন:
“আমরা কখনই ধর্মীয় জ্ঞানের ব্যাপারে চিন্তা করিনি। আমি ধার্মিকদের সবসমযই বোকা, অহংকারী এবং অভদ্র মনে করতাম।”
যাইহোক, যখন তার সাথে তার আরবি শিক্ষকের পরিচয় হয়, তখন সবকিছুই বদলে যায়। ওই শিক্ষক তার দেখা সবচেয়ে দয়ালু ব্যক্তি ছিলেন।
অবশ্য, স্কুলের পরিস্থিতি তখনও ঠিক একরকমই ছিল:
“আমি মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। তাই আমি নিজের পরিচয়কে অস্বীকার করতাম এবং আমার বাবার ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলতাম।”
অবশেষে, সমস্ত ‘ড্রামা’ থেকে দূরে থাকার জন্য, তিনি নাস্তিক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
“আমি ধর্মের বিরুদ্ধে একদম কঠিনভাবে দাঁড়িয়েছিলাম। সবাইকে বলতাম, যে মানুষের নৈতিকতার প্রয়োজন; ধর্ম নয় (মূর্খ আমি বুঝতেই পারিনি যে ধর্মের মাধ্যমেই নৈতিকতা অস্তিত্বে এসেছে)।”
একাদশ শ্রেণীতে ক্লাস ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হয়ে তিনি সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। এখনকার মতো তখনও তিনি তার চিন্তাভাবনা সম্পর্কে সোচ্চার ছিলেন। সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) পাশ করার কারণে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হলে তার ক্লাস একটা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। যদিও কিছু কিছু মানুষ ঠিক আগের মতোই ছিল, কিন্তু তার আশেপাশের অনেকেই উগ্র হিন্দুত্ববাদী ধর্মান্ধ হিসাবে তাদের আসল চেহারা প্রকাশ করেছিল। লোকেরা তাদের ফোনে তার নম্বরটি “পাত্থারবাজ” (পাথরবাজ) হিসাবে সেভ করে রাখতো; যখনি তিনি নাস্তিকতা ও সমতা নিয়ে পোস্ট করতেন তখনই তারা তাকে মেসেজ করে ইসলামের কথা তুলে গলাবাজি করত। অবশ্য, শুধুমাত্র তার নামটিই তাকে টিটকারী দেওয়ার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট ছিল।
“আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে তর্ক করতাম, ‘আমি কেন মুসলিম?’ এবং ‘আমরা কেন মুসলিম?’; যার জন্য আমি এখনও অন্তর থেকে আফসোস করি।
আমি এমনকি এটাও বলতাম যে, ‘মুসলিমরা সন্ত্রাসী!’; ‘তারা পশু খায়!’; ‘আমরা কেন এই ধর্ম ত্যাগ করছিনা?’ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার বাবা ইসলামের সমর্থন করতেন এবং তিনিই আমাকে ভুল প্রমাণ করে দিলেন। ঠিক ওই মুহুর্তেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে কিছু একটার মীমাংসা করা দরকার,-‘হয় আমি সঠিক নয়তো ইসলাম সঠিক।’
আমি পরের দুইটা বছর ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করে কাটিয়েছি এবং আলহামদুলিল্লাহ আমার জীবনটা এখন অনেক ভালো, এর আগে কখনোই এতটা ভালো ছিল না।”
এই বোনটি এখন ইসলামের বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্কৃতি এবং অ-ঔপনিবেশিকতাকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টার একটি উদ্যোগের অংশ।
আধুনিকতার ‘ইসলাম’ থেকে বিশুদ্ধ ইসলামে ফিরে আসা এরকম বহু লোকের মাত্র দুটি উদাহরণ এই মানুষগুলো।
আমি অনেক মানুষকেই তাদের লিবারেলিসম, মডার্ণিসম, সেক্যুলারিজম, নারীবাদ, নাস্তিকতা, প্রগতিবাদ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, মার্কসবাদ থেকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামে ফিরে আসার গল্প বলতে অনুরোধ করেছি। বিপুল সংখ্যক মানুষ জানিয়েছেন যে এটা মোহাম্মদ হিজাব, ড্যানিয়েল হাকিকাতজু এবং ড. ইসরার আহমেদের মতো মানুষদের সোশ্যাল মিডিয়া দাওয়াতের কারণেই সম্ভব হয়েছে। তারা তাদেরকে বস্তুবাদের খোলস থেকে বেরিয়ে ইসলামের সামগ্রিক চেতনায় ফিরে আসতে সাহায্য করেছেন।
আশ্চর্যজনকভাবে, অনেকেই বলেছেন যে, দিরিলিস এরতুগ্রুল এবং পেইতাথ আব্দুলহামিদের মতো তুর্কি ড্রামাগুলো দেখে তারা ইসলামকে বুঝেছেন। প্লিজ মনে রাখবেন যে আমরা এরকম সিনেমা এবং টেলিভিশন প্রোগ্রাম দেখা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।
সত্য ও মিথ্যার মধ্যে অবিরাম একটা দার্শনিক যুদ্ধ চলছে। এরকম সময়ে, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল এবং যুক্তিবাদীদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান; ইমাম আল-গাজ্জালী এবং বাতিনী (গূঢ়তাত্ত্বিক, সহজ কথায় তাদের সময়ের লিবারেল) আর হেলেনিস্টিক দর্শনের বিরুদ্ধে তার কঠিন বুদ্ধিবৃত্তিক আক্রমণ; এবং “দিন ই ইলাহি” (মুরতাদ মুঘল সম্রাট আকবর কর্তৃক উদ্ভাবিত এবং জোরপূর্বক মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেওয়া একটি নতুন ধর্ম)-র আক্রমণের বিপক্ষে মুজাদ্দিদ আলফেসানি শায়খ আহমাদ আল-সিরহিন্দীর দ্বারা বিশুদ্ধ ইসলামের প্রতিরক্ষা , সহ ইসলামী ইতিহাসে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ বীরদের উদাহরণগুলো স্মরণ রাখা উচিত।
RELATED: Why Do We No Longer Have Islamic Heroes Like Salah-ud-Din?